Skip to main content

একনজরে ইসলামের ইতিহাস



এক নজরে বিশ্ব নবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ)-এর মহান জীবন

* জন্ম : নবী কুলের সর্দার মহানবী হযরত রাসূলুল্লাহ (সঃ) আসহাবে ফীলের বছর অর্থাৎ ৫৭০ খৃষ্টাব্দের ১২ই বরিউল আউয়াল সোমবার সুবেহ সাদেকের সময় জন্মগ্রহণ করেন
* বংশ : মক্কার সম্ভ্রান্ত কুরাইশ বংশে জন্ম গ্রহণ করেন
* পরিচয় : রাসুল(সঃ)-এর সম্মানিত পিতার নাম আবদুল্লাহ্, মাতার নাম আমিনা, এবং দাদার নাম আবদুল মুত্তালিব বিন হাশিম এবং নানার নাম ওহাব বিন আবদে মানাফ
* বক্ষবিদারণ : রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর পবিত্র বক্ষ মোবারক মোট চারবার বিদীর্ণ করা হয় প্রথম বার তিন বছর বয়সে দুধভাই আবদুল্লাহর সাথে চারণভূমিতে থাকাবস্থায় দ্বিতীয়বার, দশবছর বয়সে মরুভূমিতে থাকাবস্থায়, তৃতীয়বার, রামাজান মাসে নবুওয়াতপ্রাপ্তির পূর্বে হেরা গুহায় অবস্থান কালে এবং চতুর্থ বার, মি'রাজের রাতে হাতিমে কা'বায় তাশরীফ গ্রহণের পর
* সিরিয়া সফর : রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর বয়স যখন ছয় বছর মতান্তরে নয় বছর হয়, তখন চাচার সাথে তিনি প্রথম সিরিয়া সফর করেন এরপর ২৩ বছর বা ২৪ বছর বয়সে হযরত খাদীজা (রাঃ)-এর গোলামের (যার নাম ছিল মাইসারা) সাথে দ্বিতীয়বার সিরিয়া সফর করেন
* বিবাহ্ : হযরত মুহাম্মদ (সঃ) পঁচিশ বছর বয়সে চল্লিশ বছর বয়সী হযরত খাদীজা বিনতে খুওয়াইলিদের সাথে বিবাহ্ বন্ধনে আবদ্ধ হন
খাদীজা (রাঃ)-এর সাথে মহানবী (সঃ) নবুওয়াতপূর্ব দীর্ঘ পনের বছরসহ মোট পঁচিশ বছর দাম্পত্য জীবন অতিবাহিত করেন তাঁর জীবদ্দশায় তিনি আর কোন বিবাহ করেন নি তাঁর ইন্তেকালের পর তিনি অন্যান্য বিবাহ করেন
* স্ত্রীগণ : রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর ১১ জন স্ত্রী ছিলেন তাঁদের মধ্যে রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর জীবদ্দশায় দুইজন (হযরত খাদীজা (রাঃ) এবং হযরত যইনব বিনতে খুযাইমা (রাঃ)) ইন্তেকাল করেন বাকী নয় জন রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর ওফাতের সময় জীবিত ছিলেন তাঁরা হলেন - () হযরত আয়েশা (রাঃ), () হযরত হাফসা (রাঃ), () হযরত উম্মে সালমা (রাঃ), () হযরত যাইনব বিনতে জাহাশ (রাঃ), () হযরত জুওয়াইরিয়া (রাঃ), () হযরত উম্মে হাবীবা (রাঃ), () হযরত সাওদা বিনতে যাম' (রাঃ), () হযরত সাফিয়া (রাঃ), এবং () হযরতর মাইমুনা (রাঃ)
সন্তানাদি : রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর দুই পুত্র (কাসিম এবং আবদুল্লাহ্ (রাঃ)) এবং চার কন্যা (হযরত যাইনব (রাঃ), হযরত রুকাইয়া (রাঃ), হযরত উম্মে কুলসুম (রাঃ) এবং ফাতিমা (রাঃ))
* নবুওয়াত লাভ : রাসূলুল্লাহ (সঃ) -এর বয়স যখন ৪০ বছর পূর্ণ হয়, তখন তাঁকে নবুওয়াত প্রদান করা হয় সে দিন ছিল ১৭ই রমাজান মতাবেক ৬ই আগষ্ট-৬১০ খৃষ্টাব্দ
* ইসলামের দাওয়াত : নবুওয়াত প্রাপ্তির পর সাসূলুল্লাহ (সঃ) প্রথম তিন বছর গোপনে ইসলাম প্রচার করেন অতঃপর আল্লাহ তাআলা তাঁকে প্রকাশ্যে ইসলাম প্রচারের নির্দেশ দেন তখন থেকে তিনি প্রকাশ্যভাবে ইসলামের দাওয়াত প্রদান করেন
* তায়িফ সফর : নবুওয়াতের দশম বছর শাওয়ালের ২৬/২৭ তারিখে যাইদ ইবনে হারিছা (রাঃ)-কে সাথে নিয়ে রাসুলুল্লাহ (সঃ) দ্বীনের দাওয়াত দিতে তায়িফ গমণ করেন
* মি'রাজ : রাসূলুল্লাহ (সঃ) -এর বয়স যখন ৫১ বছর নয় মাস হয়, তখন তাঁকে সশরীরে মর্যাদাপূর্ণ ইসরা মি'রাজ ভ্রমণের মাধ্যমে সম্মানিত করা হয় মি'রাজে রাসূলুল্লাহ (সঃ) প্রথমে কা'বা থেকে বাইতুল মুকাদ্দাসে যান, অতঃপর সেখান থেকে এক এক করে সাত আসমান অতিক্রম করে মহান আল্লাহর আরশে আজীমে তাশরীফ গ্রহণ করেন মি'রাজ সফরে রাসুলুল্লাহ (সঃ) পাঁচ ওয়াক্ত নামাযে বিধান লাভ করেন মি'রাজে গিয়ে রাসূলুল্লাহ (সঃ) জান্নাত এবং জাহান্নাম স্বচক্ষে প্রত্যক্ষ করেন
মদীনায় হিজরত : ৪ঠা রবিউল আউয়াল সোমবার রাসূলুল্লাহ (সঃ) হযরত আবু বক্কর (রাঃ) সহ মক্কা থেকে হিজরত শুরু করেন এবং লোকালয় পেরিয়ে ছাওর গুহায় অবস্থান গ্রহণ করেন অতঃপর তাঁদের সাথে আমের ইবনে ফুহাইয়া এবং আবদুল্লাহ ইবনে উরাইকিতকে নিয়ে মদীনায় হিজরত করেন
* জিহাদে অংশগ্রহণ : রাসূলুল্লাহ (সঃ) স্বীয় জীবনে সর্বোমোট তেইশটি জিহাদে অংশগ্রহণ করেন সকল জিহাদকে 'গাযওয়া' বলা হয় তন্মধ্যে মোট নয়টি যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে যথা- () গাযওয়ায়ে বদর, () গাযওয়ায়ে উহুদ, ()গাযওয়ায়ে আহযাব, () গাযওয়ায়ে বনী কুরাইযা, () গাযওয়ায়েবনী মুস্তালিক, () গাযওয়ায়ে খাইবার, () গাযওয়ায়ে ফাতহে মক্কা, () গাযওয়ায়ে হুনাইন এবং
() গাযওয়ায়ে তায়িফ
আর রাসূলুল্লাহ (সঃ) নিজে সশরীরে অংশগ্রহণ না করে অপর কাউকে সিপাহসালার নিযুক্ত করে সাহাবায়ে কেরাম -এর জামা'আতকে যে জিহাদ অভিযানে প্ররণ করেছেন, তাকে 'সারিয়্যা' বলে ধরনের জিহাদের সংখ্যা ৪৩টি
* ওফাত : রাসূল (সঃ) ৬৩ বছর বয়সে ১১ হিজরীর ১২ রবিউল আউয়াল সোমবার দুপুরের পর রফীকে 'লা মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের ডাকে সাড়া দিয়ে ইহধাম ত্যাগ করে পরপারে গমন করেন অতঃপর খলীফা নির্বাচনের কাজসমাধা করে ১৪ই রবিউল আউয়াল রাতে হযরত আয়েশা সিদ্দীকা (রাঃ)-এর গৃহে (রওযা মুবারকে ) রাসূলুল্লাহ্ (সঃ)-কে সমাহিত করা হয়

আবু বকর রা: এর পরিচয়:
আবু বকর (আরবি: أبو بكر‎) (৫৭৩ খ্রিষ্টাব্দ২৩ আগস্ট ৬৩৪ খ্রিষ্টাব্দ) ছিলেন মুহাম্মদ (সা) এর একজন প্রধান সাহাবি, ইসলামের প্রথম খলিফা এবং প্রথম মুসলিমদের মধ্যে অন্যতম প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে প্রথম ইসলাম গ্রহণের সম্মান তাকে দেয়া হয় এছাড়া তিনি রাসুল মুহাম্মদ (সা) এর শ্বশুর ছিলেন রাসুল মুহাম্মদ (সা) এর মৃত্যুর পর তিনি খলিফা হন এবং মুসলিমদের নেতৃত্ব দেন মুহাম্মদ (সা) এর প্রতি অতুলনীয় বিশ্বাসের জন্য তাকেসিদ্দিকবা বিশ্বস্ত উপাধি প্রদান করা হয়েছে[] তাই তাকে আবু বকর সিদ্দিক নামেও সম্বোধন করা হয়
তরুণ বয়সে আবু বকর একজন বণিক হিসেবে জীবিকা নির্বাহ শুরু করেন তিনি আরব প্রতিবেশি মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য অঞ্চলে ভ্রমণ করেছেন এর মাধ্যমে তিনি সম্পদশালী হয়ে উঠেন এবং অভিজ্ঞতা অর্জন করেন তিনি তার গোত্রের একজন নেতা হয়ে উঠেছিলেন[] ইয়েমেন থেকে বাণিজ্য শেষে ফেরার পর তিনি মুহাম্মদ (সা) এর ইসলাম প্রচারের সংবাদ পান এরপর তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন তার ইসলাম গ্রহণ অন্য অনেকের ইসলাম গ্রহণের উৎসাহ যুগিয়েছে[] আবু বকরের মেয়ে আয়িশার সাথে মুহাম্মদ (সা) এর বিয়ের ফলে তাদের দুজনের সম্পর্ক আরো ঘনিষ্ঠ হয়[]
আবু বকর একজন একনিষ্ঠ উপদেষ্টা হিসেবে মুহাম্মদ (সা) এর সহযোগিতা করেছেন তার জীবদ্দশায় আবু বকর বেশ কয়েকটি যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন তাবুকের যুদ্ধে তিনি তার সমস্ত সম্পদ দান করে দেন[] হুদায়বিয়ার সন্ধিতে আবু বকর অংশ নিয়েছিলেন এবং তিনি ছিলেন এই চুক্তির অন্যতম স্বাক্ষী[]
আবু বকরের খিলাফত দুই বছরের কিছু বেশি সময় স্থায়ী হয়েছিল এরপর তিনি অসুস্থ হয়ে মারা যান তার খিলাফতকাল দীর্ঘ না হলেও তিনি একজন সফল শাসক ছিলেন মুহাম্মদ (সা) এর মৃত্যুর পর নবী দাবি করা ব্যক্তিদের তিনি রিদ্দার যুদ্ধে সফলভাবে দমন করেছেন এবং তৎকালীন দুটি পরাশক্তি পারস্য বাইজেন্টাইনদের উপর সফল অভিযান পরিচালনা করেছেন অভিযানের ধারাবাহিকতায় কয়েক দশকে মুসলিম খিলাফত ইতিহাসের সর্ববৃহৎ সাম্রাজ্যের একটিতে পরিণত হয়
হযরত ওমর রা: এর পরিচয়:
তাঁর ব্যক্তিগত নাম ছিলউমর’, ‘ফারুকতাঁর উপাধি এবং ইব্ আল খাত্তাব তাঁর পারিবারিক নাম তিনি৫৮১ খ্রীস্টাব্দে মক্কায় কুরাইশদের এক উচ্চ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি একজন বিখ্যাত ব্যবসায়ী ছিলেন এবং তিনি সিরিয়া ইরাকে বাণিজ্য প্রতিনিধিদের নেতৃত্ব দিতেন
হযরত উমর (রাঃ) মহানবী (সাঃ) এর দ্বিতীয় খলিফা ছিলেন তার খিলাফতকালে, মুসলমানদেরকে ইরান, ইরাক, সিরিয়া এবং মিশরের বিরূদ্ধে অনেক গুলো যুদ্ধকরতে হয় যার ফলশ্রুতিতে এসব দেশের ব্যাপক এলাকা মুসলিম শাসনাধীনে চলে আসে যখন ১৭হিজরীতে মুসলমানদের দ্বারা জেরূযালেম বিজিত হলো, তখন রোমানদের অনুরোধে তিনি সেই শহর পরিদর্শন করেন এবং মুসলমান জেরূযালেমের অধিবাসীদের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেন হযরত উমর (রাঃ) ইসলামী রাষ্ট্রের জন্য এক চমৎকার প্রশাসন ব্যবস্থা চালু করেন এক্ষেত্রে তাঁর প্রধান কিছু কৃতিত্ব হলোঃ
মজলিশে শূরা প্রতিষ্ঠা, যা খলিফাকে পরামর্শ দানকারী একটি মন্ত্রণা পরিষদ
পুরো ইসলামী রাষ্ট্রকে প্রশাসনের সুবিধার্থে প্রদেশে বিভক্তিকরণ
অর্থ বিভাগের প্রতিষ্ঠা এবং রাষ্ট্রের বিভিন্ন অংশে স্কুল এবং মসজিদ নির্মাণ
ইসলামী হিজরী বর্ষপঞ্জীর প্রতিষ্ঠা
হযরত উমর (রাঃ) তাঁর অধীনস্থ লোকদের মঙ্গলচিন্তায় এতটা উদ্বিগ্ন থাকতেন যে, তিনি রাতে ছদ্মবেশে মদীনা শহরেবেরিয়ে পড়তেন
৬৪৪ খ্রীস্টাব্দে, হযরত উমর (রাঃ) মসজিদে নামাজ পড়া অবস্থায় এক পার্শী ভৃত্য দ্বারা ছুরিকাহত হন এটা মারাত্নক প্রতিপন্ন হয় এবং এভাবে তিনি ৬৩ বছর বয়সে ২৬শে জুলহাজ্জ্ব, ২৩শে হিজরী সালে পরলোক গমন করেন
তিনি প্রকৃতই একজন মহান খলিফা ছিলেন, তাঁর খিলাফতকাল নিঃসন্দেহে ইসলামের ইতিহাসের এক সোনালী অধ্যায়
তিনি সেই দশজন সৌভাগ্যশালীদের একজন মহানবী (সাঃ) যাঁদের বেহেস্তের সুসংবাদ প্রদান করেছিলেন
উমর ইবনুল খাত্তাব
উমর ইবনুল খাত্তাব (আরবি: عمر بن الخطاب ‎, জন্ম ৫৭৭ খ্রিষ্টাব্দ – মৃত্যু ৬৪৪ খ্রিষ্টাব্দ) ছিলেন ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা এবং প্রধান সাহাবীদের অন্যতম আবু বকরের মৃত্যুর পর তিনি দ্বিতীয় খলিফা হিসেবে দায়িত্ব নেন উমর ইসলামি আইনের একজন অভিজ্ঞ আইনজ্ঞ ছিলেন ন্যায়ের পক্ষাবলম্বন করার কারণে তাকে আল ফারুক (সত্য মিথ্যার পার্থক্যকারী) উপাধি দেয়া হয় আমিরুল মুমিনিন উপাধিটি সর্বপ্রথম তার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়েছে ইতিহাসে তাকে প্রথম উমর হিসেবেও উল্লেখ করা হয় নামের মিল থাকার কারণে পরবর্তী কালের উমাইয়া খলিফা উমর ইবনে আবদুল আজিজকে দ্বিতীয় উমর হিসেবে সম্বোধন করা হয় সাহাবীদের মর্যাদার ক্ষেত্রে সুন্নিদের কাছে আবু বকরের পর উমরের অবস্থান[][][] শিয়া সম্প্রদায় উমরের এই অবস্থান স্বীকার করে না
উমরের শাসনামলে খিলাফতের সীমানা অকল্পনীয়ভাবে বৃদ্ধি পায় এসময় সাসানীয় সাম্রাজ্য বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের দুইতৃতীয়াংশ মুসলিমদের নিয়ন্ত্রণে আসে তার শাসনামলে জেরুজালেম মুসলিমদের হস্তগত হয় তিনি পূর্বের খ্রিষ্টান রীতি বদলে ইহুদিদেরকে জেরুজালেমে বসবাস উপাসনা করার সুযোগ দিয়েছিলেন

উসমান ইবন আফ্ফান রা: এর পরিচয় :
উসমান ইবন আফ্ফান (عثمان بن عفان) (c. ৫৮0 - জুন ১৭ ৬৫৬) ছিলেন ইসলামের তৃতীয় খলীফা ৬৪৪ থেকে ৬৫৬ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত খিলাফতে অধিষ্ঠিত ছিলেন খলিফা হিসেবে তিনি চারজন খুলাফায়ে রাশিদুনের একজন উসমান আস-সাবিকুনাল আওয়ালুনের (প্রথম পর্বে ইসলাম গ্রহণকারী) অন্তর্ভুক্ত এছাড়াও তিনি আশারায়ে মুবাশ্শারা' একজন এবং সেই জন সাহাবীর মধ্যে অন্যতম যাদের উপর মুহাম্মদ (সা:) আমরণ সন্তুষ্ট ছিলেন[] তাঁকে সাধারণত: হযরত উসমান (রা:) হিসেবে উল্লেখ করা হয়
হাদীস সংকলনের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর জীবদ্দশায় সাহাবীগণ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর হাদীসসমূহ অত্যান্ত আগ্রহ সহকারে মুখস্ত করে স্মৃতিপটে রাখতেন আবার অনেকে মহানবী (সাঃ) এর অনুমতি সাপেক্ষে কিছু কিছু হাদীস লিখে রাখতেন এভাবে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর জীবদ্দশায় স্মৃতিপটে মুখস্ত করে রাখার সাথে সাথে কিছু হাদীস লিখিত আকারে লিপিবদ্ধ ছিল হযরত আলী, হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর, হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস, হযরত আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) প্রমুখ সাহাবীগণ কিছু কিছু হাদীস লিপিবদ্ধ করে রাখতেন হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেনআবদুল্লাহ ইবনে আমর ব্যতীত আর কোন সাহাবী আমার অপেক্ষা অধিক হাদীস জানতেননা কারন,তিনি হাদীস লিখে রাখতেন আর আমি লিখতামনা
মহানবী (সাঃ) এর জীবদ্দশায় ইসলামী রাষ্ট্রের প্রশাসনিক বহু কাজকর্ম লিখিতভাবে সম্পাদনা করা হতো বিভিন্ন এলাকার শাসনকর্তা, সরকারী কর্মচারী এবং জনসাধারনের জন্য বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বিষয়ে লিখিত নির্দেশ প্রদান করা হতো তাছাড়া রোম, পারস্য প্রভৃতি প্রতিবেশী দেশসমূহের সম্রাটদের সাথে পত্র বিনিময়, ইসলামের দাওয়াত এবং বিভিন্ন গোত্র সম্প্রদায়ের সাথে চুক্তি সন্ধি লিখিতভাবে সম্পাদন করা হতো আর মহানবীর আদেশক্রমে যা লেখা হতো তা হাদীস বলে পরিচিত
মহানবী (সাঃ) এর ওফাতের পর বিভিন্ন কারনে হাদীস সংকলনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয় কুরআন মাজীদের সাথে হাদীস সংমিশ্রণ হওয়ার আশংকায় কুরআন পুর্ণ গ্রন্থাকারে লিপিবদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত হাদীস লিপিবদ্ধ করতে কউ সাহস পায়নি হযরত আবূ বকর (রাঃ) এর আমলে কুরআন মজীদ গ্রন্থাকারে লিপিবদ্ধ হলে সাহাবীগণ হাদীস লিপিবদ্ধ করার ব্যপারে আর কোন বাধা আছে বলে অনুভব করেননি
হিজরী প্রথম শতাব্দীর শেষভাগে সাহাবি তাবেয়ীগণ প্রয়োজন অনুসারে কিছু হাদীস লিপিবদ্ধ করেন
অতঃপর উমাইয়া খলিফা উমর ইবনে আব্দুল আযীয () হাদীস সংগ্রহের জন্য মদীনার শাসনকর্তা আবু বকর বিন হাজম সহ মুসলিমবিশ্বের বিভিন্ন এলাকার শাসনকর্তা আলিমগণের কাছে একটি ফরমান জারী করেন যে, আপনারা মহানবী (সাঃ) হাদীসসমূহ সংগ্রহ করুন কিন্তু সাবধান! মহানবী (সাঃ) এর হাদীস ব্যতীত অন্য কিছু গ্রহন করবেননা আর আপনার নিজ নিজ এলাকায় মজলিস প্রতিষ্ঠা করে আনুষ্ঠানিকভাবে হাদীস শিক্ষা দিতে থাকুন কেননা, জ্ঞান গোপন থাকলে তা একদিন বিলুপ্ত হয়ে যায়
এই আদেশ জারীর পর মক্কা,মদীনা,সিরিয়া.ইরাক এবং অন্যান্য অন্ঞ্চলে হাদীস সংকলনের কাজ শুরু হয় কথিত আছে যে, প্রখ্যাত মুহাদ্দিস ইমাম ইবনে শিহাব যুহরী (রঃ) সর্বপ্রথম হাদীস সংগ্রহ এবং সংকলনে হাত দেন কিন্তু তাঁর সংকলিত হাদীসগ্রন্থের বর্তমানে কোন সন্ধান পাওয়া যায়না এরপর ইমাম ইবনে জুরাইজ () মক্কায়, ইমাম মালিক () মদীনায়, আবদুল্লাহ ইবনে ওয়াহাব () মিসরে, আব্দুর রাজ্জাক ইয়েমেনে, আবদুল্লাহ ইবনে মুবারক খুরাসানে, এবং সূফিয়ান সাওরী হাম্মাদ ইবনে সালমা বসরায় হাদীস সংকলনে আত্ননিয়োগ করেন যুগের ইমামগণ কেবল দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োজনীয় হাদীসগুলো স্থানীয় হাদীস শিক্ষাকেন্দ্রে প্রাপ্ত হাদীসসমূহ লিপিবদ্ধ করেছিলেন তাঁদের কউই বিষয়বস্তু হিসেবে বিন্যাশ করে হাদীসসমূহ লিপিবদ্ধ করেননি
যুগে লিখিত হাদীস গ্রন্থসমূহের মধ্যে ইমাম মালিকেরমুয়াত্তাসর্বপ্রথম সর্বপ্রধান প্রমান্য হাদীসগ্রন্থ ইমাম মালিকেরমুয়াত্তাগ্রন্থটি হাদীস সংকলনের ব্যপারে বিপূল-উৎসাহ উদ্দিপনার সৃষ্টি করেছিল এটি হাদীসশাস্ত্র অধ্যায়নে মুসলিম মণিষীদের প্রধান আর্কষণে পরিনত হয়েছিল এরই ফলশ্রূতিতে তৎকালীন মুসলিম বিশ্বে সর্বত্র হাদীসচর্চার কেন্দ্র স্হাপিত হতে থাকে ইমাম শাফঈ () এর কিতাবুলউম্মএবং ইমাম আহমাদ বিন হাম্বলেরমাসনাদগ্রন্থদ্বয় হাদীসের উপর গুরুত্বপুর্ণ গ্রন্থ হিসেবে বিবেচিত
অতঃপর হিজরী তৃতীয় শতাব্দীতে বিভিন্ন মণিষী মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন অন্ঞ্চল থেকে প্রচুর হাদীস সংগ্রহ করেন তন্মধ্যে বিখ্যাত হলেন ইমাম বুখারী (), ইমাম মুসলিম (), ইমাম আবূ দাউদ (), ইমাম তিরমিজী (), ইমাম নাসাঈ (), এবং ইমাম ইবনে মাজাহ () এদের সংকলিত হাদীস গ্রন্থগুলো হলো সহীহ বুখারী, সহীহ মুসলিম, সুনানে আবূ দাউদ, জামিতিরমিযী, সূনানে নাসাঈ এবং সূনানে ইবনে মাজাহ্ এই ছয়খানা হাদীসগ্রন্থকে সন্মিলিতভাবে সিহাহ সিত্তাহ বা ছয়টি বিশুদ্ধ হাদীসগ্রন্থ বলা হয়
উল্লিখিত আলোচনার প্রেক্ষিতে আমরা কথা র্নিদ্বিধায় বলতে পারি যে, মহানবী (সাঃ) এর জীবদ্দশায় যে হাদীস সমূহ প্রধানত সাহাবীদের স্মৃতিপটে মুখস্ত ছিল তা ধীরে ধীরে লিখিত রুপ নেয় এবং আব্বাসিয় যুগে হাদীস লিপিবদ্ধের কাজ পরিসমাপ্ত হয় এটিই হলো হাদীস সংকলনের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
আলী ইবন আবী তালিব (আরবি: علي بن أبي طالب‎) (জন্ম: খ্রিস্টাব্দ ৬০০৬৬১) ইসলামের চতুর্থ শেষ খলিফা তিনি ছিলেন আবু তালিবের পুত্র তাঁর মাতার নাম ফাতিমা বিনতে আসাদ হয়রত আলী কোরায়েশ বংশে জন্মগ্রহণ করেন শিশু বয়স থেকেই তিনি ইসলামের নবী হযরত মুহাম্মদের (সা:) সঙ্গে লালিত-পালিত হন ইসলামের ইতিহাসে তিনি পুরুষদের মধ্যে সর্বপ্রথম যিনি হযরত মুহাম্মদের সাথে নামাজ আদায় করতেন বালকদের মধ্যে তিনি সর্ব প্রথম বালক যিনি নবুয়তের ডাকে সাড়া দিয়ে মাত্র ১০ বছর বয়সে ইসলাম গ্রহণ করেন তিনি ছিলেন একজন অকুতভয় যোদ্ধা বদর যুদ্ধে বিশেষ বীরত্তের জন্য মুহাম্মদ তাঁকে "জুলফিকার" নামক তরবারি উপহার দিয়েছিলেন খাইবারের সুরক্ষিত কামূস দুর্গ জয় করলে মহানবী তাঁকে "আসাদুল্লাহ" বা আল্লাহর সিংহ উপাধি দেন তিনি খুলাফায়ে রাশেদীন-এর একজন
আবিসিনিয়ায় হিজরত (আরবি: الهجرة إلى الحبشةal-hijraʾilā al-hābsḥa) or the First Hijrah (আরবি: هِجْرَةhijrah, or hijrat) দ্বারা মক্কা থেকে মুসলিমদের প্রথমবারের মত হিজরতকে বোঝানো হয় কুরাইশ নেতৃবৃন্দের নির্যাতনের এক পর্যায়ে এই হিজরতের সিদ্ধান্ত নেয়া হয় এটি মদিনায় হিজরতের পূর্বের ঘটনা মুহাজিরগণ আকসুম রাজ্যে বা আবিসিনিয়ায় আশ্রয় নেন বর্তমানে তা ইথিওপিয়ার অন্তর্গত
আবিসিনিয়ার খ্রিষ্টান রাজা মুসলিমদের আশ্রয় দিয়েছিলেন তাদের ফিরিয়ে নেয়ার জন্য মক্কা থেকে কুরাইশরা প্রতিনিধি পাঠালে রাজা তাদের ফিরিয়ে দেয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন মুহাম্মদ (সা) এর মদিনায় হিজরত করার পরও মুসলিমরা আবিসিনিয়ায় থেকে যান হিজরি ৭ম সালে তারা মদিনায় ফিরে আসেন
বদরের যুদ্ধ
বদরের যুদ্ধ সংগঠিত হয়েছিল ৬২৪ খ্রিস্টাব্দে বদরের যুদ্ধ পৌওলিক কুরাইশদের বিরুদ্ধে সংঘটিত হয়ে ছিল যা ইতিহাসে 'বদরের যুদ্ধ' নামে পরিচিত
বদর যুদ্ধে কুরাইদের ১০০০ সৈন্য নিয়ে হযরত মুহাম্মদ (.) ৬২৪ খ্রিঃ ১৭ই মার্চ (১৭ই রমজান, ২য় হিজরি) ৩১৩ জন মুজাহিদ নিয়ে গঠিত একটি ক্ষুদ্র বাহিনী নিয়ে মদিনার প্রায় ৮০ মাইল দক্ষিণ-পশ্চিমে বদর নামক স্থানে যুদ্ধ সংঘঠিত হয় বদর যুদ্ধে আবুজেহেলসহ মোট ৭০ জন কুরাইশ নিহত এবং ৭০ জন বন্দি হয় মুসলমানদের পক্ষে মাএ ১৪ জন শাহাদাত্বরণ করে
[Note: যুদ্ধে নবীর দুটি দাঁত মোবারক শহীদ হয়]


উহুদ যুদ্ধ
উহুদের যুদ্ধ ইসলামের ইতিহাসে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ঘটনা বদরের যুদ্ধের (৬২৪ সালে বদরের যুদ্ধ) পরের বছর এই যুদ্ধ সংঘটিত হয় বদরের যুদ্ধে পরাজয়ের প্রতিশোধ হিসেবে কুরাইশরা মদীনা আক্রমণ করতে আসে ফলে এই যুদ্ধের সূত্রপাত ইসলামের প্রাথমিক যুগের হিজরি তৃতীয় সালে মদিনার তিন মাইল উত্তর-পূর্বে উহুদ নামক একটি পাহাড়ে নিকটস্থ কঙ্করময় প্রান্তরে এই যুদ্ধ সংঘটিত হয় বদর যুদ্ধে পরাজয়ের প্রতিশোধ গ্রহণ এবং একই সঙ্গে ইসলাম ধর্মকে অঙ্কুরেই বিনাশ করার উদ্দেশ্য নিয়ে মক্কার তিন হাজার যোদ্ধা মদিনা অভিমুখে অভিযান করে প্রথমাবস্থায় মুসলিম বাহিনীর বিজয় লাভের লক্ষণ দেখা যায় বিজয়ের আভাস দেকে কিছু সংখ্যক যোদ্ধা অসতর্ক হয়ে পড়লে বিপর্যয় নেমে আসে তাঁদের নেতা মুহাম্মাদ (সা.) নির্দেশ ভুলে গিয়ে মুসলমান তীরন্দজগণ নিদির্ষ্ট স্থান পরিত্যাগ করে অন্যত্র চলে যাওয়ায় স্থান অরক্ষিত হয়ে পড়ে এবং এই সযোগে মক্কায় যোদ্ধাগণ পিছন দিক থেকে মুসলিম বাহিনীকে আক্রমণের সুযোগ পেয়ে যায় ফলে মুসলিম বাহিনী অতর্কিতে বিপর্যস্ত অবস্থায় পড়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে ফলশ্রুতিতে হামজা(রা.) সহ প্রায় সত্তর জন মুসলমান শহীদ হন মুহাম্মদ (সা.), আবুবকর (রা.) উমর (রা.) আহত হন মুহাম্মাদ (সা.) একটি দাঁত ভেঙে যায় মুসলমানদের বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হয় তবে তাঁরা আত্মরক্ষা করতে সমর্থ হয় তাঁরা বীরত্বের সঙ্গে প্রতিরোধ করায় শত্রুপক্ষ মক্কায় ফিরে যেতে বাধ্য হয়
রিদ্দার যুদ্ধ
রিদ্দার যুদ্ধ (Arabic: حروب الردة) খলিফা আবু বকরের শাসনামলে ৬৩২ থেকে ৬৩৩ সালের মধ্যে সংঘটিত হয় সময় বিদ্রোহী আরব গোত্রগুলোর বিরুদ্ধে ধারাবাহিকভাবে বেশ কয়েকটি অভিযান পরিচালিত হয়েছিল[] বিদ্রোহীদের বক্তব্য ছিল তারা মুহাম্মদ (সা) এর অনুগত ছিল কিন্তু আবু বকরকে তারা মানবে না কিছু বিদ্রোহী তুলায়হা, মুসায়লিমা সাজাহর অনুসরণ শুরু করেছিল এই তিন ব্যক্তি নিজেদের নবী দাবি করত বিদ্রোহীদেরকে পরাজিত করে খিলাফতের অন্তর্ভুক্ত করা হয় মক্কার আশেপাশের অধিবাসীরা বিদ্রোহ করেনি

খন্দকের যুদ্ধ
৫ম হিজরীর শাওয়াল মাসে খন্দকের যুদ্ধ সংঘঠিত হয় খন্দকের যুদ্ধে কোরাইশদের সম্মিলিত বাহিনীর আক্রমণের বিরুদ্ধে মদিনা নগরী রক্ষাকল্পে পারস্য থেকে আগত বর্ষীয়ান সাহাবী হযরত সালমান ফারসী রা. পরামর্শে তার দেশের প্রাচীন প্রথায় শত্রুবাহিনীর প্রবেশ রোধ করার উদ্দেশ্যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মদীনা নগরীর চারপাশে পরিখা খননের নির্দেশ দেন ইহা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সমর- কৌশলের এক অনন্য অভাবনীয় কৃতিত্ব এই পরিকল্পনাই বারো হাজার সৈন্যে প্রবল শত্রুবাহিনীকে প্রায় এক মাসকাল পরিখার বাইরে নিস্ফল অবস্থানের পর প্রবল শীত তুষার ঝড়ের মধ্যে ভবিষ্যতে মুসলমানদের বিরুদ্ধে আর কোনো যুদ্ধের অভিপ্রায় ত্যাগ করে চলে যেতে বাধ্য করেছিল এরপর কুরাইশরা মক্কার অভিমুখে আর কখনো আক্রমণ করেনি পরিখা খননের সময় বিরাট একটি পাথর কোনো সাহাবি ভাঙতে না পারলেও রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইহা কুঠারের তিন আঘাতে টুকরো টুকরো করেন সেই সময় উনি মুসালমানদের সিরিয়া, ইরান ইয়ামেন বিজয়ের সুসংবাদ দেন ইহা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর একটি মুজিযা

মদিনায় স্থাপিত প্রথম ইসলামী রাষ্ট্রের সচিবালয়ের সংক্ষিপ্ত পরিচিত
রাষ্ট্রপ্রধানের দ্প্তর
. হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর ব্যক্তিগত সচিব : হযরত হানযালা ইবনে আলরবি
. পত্রলিখন অনুবাদ বিভাগ (সচিব) : হযরত আলী (রা.), হযরত মুয়াবিয়া (রা.) হযরত জায়েদ ইবনে সাবিত (রা.)
. সচিব : হযরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) হযরত শুরাহবিল ইবনে হাসান (রা.)
. সিলমোহরের আংটিটির সংরক্ষক : হযরত মুকরি ইবনে আবি ফাতিমা (রা.)
. অভ্যর্থনা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত : হযরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) হযরত বারাহ (রা.)
. অর্থ হিসাব বিভাগ : হযরত মুয়ানকি ইবনে আবি ফাতিমা (রা.)
. জনস্বাস্থ্য বিভাগ : চিকিৎসক হারিস ইবনে সালাহ এবং আবিবার পুত্র
. শিক্ষা বিভাগ (স্বাক্ষরজ্ঞান) : হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে সাইদ (রা) আয়েশা সিদ্দিকা (রা.)
. যাকাত সদ্কা বিভাগ : হযরত যোবায়ের ইবনে আওয়াম যুহাইর
১০. বিজয়ের পর মক্কার প্রশাসক ছিলেন : হযরত ইত্তাব ইবনে উসাইদ (রা.)
১১. ইয়েমেনের দায়িত্বে ছিলেন : হযরত মুয়াজ ইবনে জাবাল (রা.)
১২. আম্মানের দায়িত্বে ছিলেন : হযরত আমর ইবনে আজ (রা.)
১৩. ওহি বিভাগ : হযরত আবু বকর এবং ওসমান (রা.) সহ চার খলিফা সবাই এবং হযরত জায়েদ ইবনে আজ সাবিত (রা.), উবায় বিন কাব (রা.), মুয়াবিয়া (রা.), খালেদ বিন ওয়ালিদ (রা.), মুগিরা ইবনে শুবা (রা.) এবং আব্দুল্লাহ ইবনে রাওয়াসহ দশজন মেধাবী-উচু মর্যাদার সাহাবী
১৪. প্রতিরক্ষা বিভাগ : নবীজী (.) নিজে ছিলেন তবে অধিনায়ক হিসেবে ৭২টি নিয়োগদান করেছিলেন
১৫. জননিরাপত্তা বিভাগ : হযরত কায়েস ইবনে সায়াদ (রা.)
১৬. বিচারপতি হিসেবে : হযরত ওমর হযরত আলী (রা.) সহ আটজন মশহুর বিদগ্ধ সাহাবী
সূত্র : গভর্নমেন্ট আন্ডার দ্যা প্রফেট, ফুতহুল বুলদান, সিরাতে ইবনে হিশাম
মদিনা সনদ
THE MEDINA CHARTER

ইসলামী রাষ্ট্রের প্রথম রাজধানী মদিনা থেকে ঘোষিত ৪৭টি ধারা সংবলিত একটি সনদ বা সংবিধান।

৬২২ খ্রিষ্টব্দের ২৪শে সেপ্টেম্বর ইসলাম ধর্মের নবী হজরত মুহম্মদ (সাঃ)  মক্কা থেকে মদিনা নগরীতে আসেন। ধীরে ধীরে নবীর নেতৃত্বে মদিনা মুসলমানদের কেন্দ্রীয় অঞ্চলে পরিণত হয়। এসময় সেখানে বসবাসরত বিভিন্ন সম্প্রদায় গুলোর মধ্যে গোষ্ঠীগত হিংসা-বিদ্বেষ ছিল। কলহে লিপ্ত বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে ভ্রতৃত্বতৃত্ব্য সম্প্রীতি স্থাপন সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে হযরত মুহাম্মদ (সা:) ৪৭ ধারার একটি সনদ বা সংবিধান প্রণয়ন করেন যা পৃথিবীর ইতিহাসে মদিনার সনদ নামে পরিচিত।
এই সনদ তৈরির প্রায় সমসাময়িক ইতিহাসবিদ ইবনে হিশাম (.) তাঁর 'সিরাতুননবী (সা.)' গ্রন্থে সনদের ৫৩টি ধারার বর্ণনা করেছেন। [দ্র. ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ থেকে বাংলা ভাষায় অনূদিত এই গ্রন্থের দ্বিতীয় খণ্ডের (ঢাকা : ১৯৯৪, পৃ. ১৬৩-১৭১।)] তবে উইলিয়াম মন্টেগোমারি ওয়াট তাঁর 'মুহাম্মদ অ্যাট মদিনা' গ্রন্থে এই সনদের (পৃ. ২২১-২২৫) ৪৭টি ধারা উল্লেখ করেছেন।
অধিকাংশ বাংলায় রচিত প্রায় সকল গ্রন্থে এই সনদের সংক্ষিপ্ত রূপ পাওয়া যায়। নিচে বাংলা উইকি থেকে এই সনদের বিষয় তুলে ধরা হলো।

এই সনদের মূল বিষয়বস্তু ছিল:
) সনদপত্রে স্বাক্ষরকারী সম্প্রদায়সমূহ ইসলামী রাষ্ট্রের অধীনে একটি সাধারণ জাতি গঠন করবে।
) হযরত মুহাম্মদ () ইসলামী রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধান থাকবেন।
) কোন সম্প্রদায় গোপনে কুরাইশদের সাথে কোন প্রকার সন্ধি করতে পারবে না কিংবা মদীনা বা মদীনাবাসীদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে কুরাইশদের কোনরুপ সাহায্য-সহযোগীতা করতে পারবে না।
) মুসলিম, খ্রীস্টান, ইহুদী, পৌত্তলিক অন্যান্য সম্প্রদায় ধর্মীয় ব্যাপারে পূর্ণ স্বাধীনতা ভোগ করবে। কেউ কারো ধর্মীয় কাজে কোন রকম হস্তক্ষেপ করতে পারবে না।
) মদিনার উপর যে কোন বহিরাক্রমণ কে রাষ্ট্রের জন্য বিপদ বলে গণ্য করতে হবে। এবং সেই আক্রমণ কে প্রতিরোধ করার জন্য সকল সম্প্রদায়কে এক জোট হয়ে অগ্রসর হতে হবে।
) রাষ্ট্রের প্রতি নাগরিকের অধিকার নিরাপত্তা রক্ষার ব্যবস্থা থাকবে।
) অসহায় দূর্বলকে সর্বাবস্থায় সাহায্য রক্ষা করতে হবে।
) সকল প্রকার রক্তক্ষয়, হত্যা বলাৎকার নিষিদ্ধ করতে হবে এবং মদীনাকে পবিত্র নগরী বলে ঘোষণা করা হবে।
) কোন লোক ব্যক্তিগত অপরাধ করলে তা ব্যক্তিগত অপরাধ হিসেবেই বিচার করা হবে। তজ্জন্য অপরাধীর সম্প্রদায় কে দায়ী করা যাবে না।
১০) মুসলমান, ইহুদী অন্যান্য সম্প্রদায়ের লোকেরা পরষ্পর বন্ধুসুলভ আচরণ করবে।
১১) রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিরোধ নিষ্পত্তির অধিকার থাকবে রাষ্ট্রপ্রধানের এবং তিনি হবেন সর্বোচ্চ বিচারালয়ের সর্বোচ্চ বিচারক।
১২) মুহাম্মদ (সাঃ) এর অনুমতি ব্যতীত মদীনাবাসীগণ কারও বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করতে পারবে না।
১৩) মুসলমানদের কেউ যদি অন্যায় কিংবা বিশ্বাসঘাতকতা করে তবে সবাই মিলে তার বিরুদ্ধে যথোচিত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। নিজ সন্তান বা আত্নীয় হলেও ব্যাপারে তাকে ক্ষমা করা যাবে না

মক্কা বিজয়
নবী হযরত মুহাম্মদ (সা:) খ্রিস্টীয় ৬৩০ অব্দে রক্তপাতহীনভাবে মক্কা নগরী দখল করেন ইতিহাসে এই ঘটনা মক্কা বিজয় নামে খ্যাত ঐতিহাসিকদের মতে মক্কা বিজয় ইসলামের ইতিহাসে সর্বশ্রেষ্ঠ বিজয় যদিও আল কুরআনে হুদাইবিয়ার সন্ধিকেই প্রকাশ্য বিজয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে মূলত প্রকৃতপক্ষে হুদাইবিয়ার সন্ধি এবং মক্কা বিজয় দুটিই মুহাম্মদের অতুলনীয় দূরদর্শীতার ফল হুদাইবিয়ার সন্ধির মাধ্যমে যে বিজয়ের সূত্রপাত হয়েছিল তার চূড়ান্ত রূপই চিল মক্কা বিজয় এই বিজয়ের ফলে মুসলমানদের পক্ষে আরবের অন্যান্য এলাকা বিজয় করা সহজসাধ্য হয়ে পড়ে হুদাইবিয়ার সন্ধি মোতাবেক সন্ধির পরবর্তী বছর মুহাম্মদ ২০০০ সাহাবা নিয়ে মক্কায় উমরাতুল ক্বাযা পালন করতে আসেন এবং সময়ই তিনি মক্কার কুরাইশদের মধ্যে নেতৃত্বের শুন্যতা লক্ষ্য করেন তাদের ক্ষাত্রশক্তির সঠিক পরিমাপ করতে পেরেছিলেন তিনি এবং এজন্যই অধীর ছিলেন মক্কা বিজয়ের জন্য এর বছরের মাথায়ই তিনি তা সম্পন্ন করার জন্য মনস্থির করেন
মুতার যুদ্ধ :
মাত্র তিন হাজার মুসলিম সেনার বিরুদ্ধে এক লক্ষ সুসজ্জিত রোমান সেনা লড়তে এসেছে রাসুলুল্লাহ সাঃ যখন যুদ্ধে বাহিনী পাঠান, তখন তিনি এমন নির্দেশনা দিয়েছিলেন যা তিনি এর আগে কখনও দেননি তিনি বলেছিলেন, “ যুদ্ধে তোমাদের নেতৃত্ব দেবে যায়িদ বিন হারিসা (রাসুলুল্লাহ সাঃ এর আযাদকৃত দাস) যায়িদ যদি শহীদ হয় তাহলে নেতৃত্ব দেবে জাফর বিন আবু তালিব (রাসুলুল্লাহ সাঃ এর চাচাত ভাই এবং আলী রাঃ এর বড় ভাই), আর জাফর যদি শাহীদ হয় তাহলে নেতৃত্ব দেবে আব্দুল্লাহ বিন রাওয়াহা (মদীনার আনসার তৎকালীন আরবের বিখ্যাত কবি) আর যদি আব্দুল্লাহ শহীদ হয়, তাহলে তোমরা নিজেরা তোমাদের পরবর্তি নেতা ঠিক করবে রাসুলুল্লাহ সাঃ এর এই ঘোষণা শুনে অনেকেই নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিলো যে, রাসুলের উল্লেখ করা তিন সাহাবা সত্যিই শহীদ হতে যাচ্ছেন
মুসলিম বাহিনী যখন মুতায় পৌঁছালো, তারা বিস্ময়ের সাথে দেখলো যে লক্ষ সেনার রোমান বাহিনী প্রস্তুত তাদের মোকাবেলা করার জন্য এমন নাজুক অবস্থায় অনেকে মন্তব্য করল ফিরে যাওয়ার জন্য কিন্তু সেনাপতি যায়িদ বিন হারিসা সহ অধিকাংশ মুসলিম মত প্রকাশ করলেন যে, আমরা পিছু হটে যাবার জন্য এখানে আসিনি
খায়বারের যুদ্ধ
হিজরী সপ্তম সনের মুহরারাম মাস
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবার ষড়যন্ত্রের অন্যতম প্রধান কেন্দ্র খাইবারের দিকে দৃষ্টি দেন ষোল শত যোদ্ধা নিয়ে তিনি খাইবার এসে পৌঁছেন খাইবার ছিলো ৬টি দুর্গ এই সব দুর্গ ছিলো ২০ হাজার ইয়াহুদী যোদ্ধা ইয়াহুদীরা কোনরূপ সন্ধি করতে রাজী হলো না মুসলিম বাহিনী দুর্গগুলো অবরোধ করে মাঝে-মধ্যে কয়েকটি খন্ডযুদ্ধ হয় বিশদিন পর্যন্ত যুদ্ধ চলে অবশেষে আল্লাহ মুসলিমদেরকে বিজয় দান করেন এই যুদ্ধে ৯৩ জন ইয়াহুদী নিহত হয় ১৫ জন মুসলিম শহীদ হন খাইবার জমি মুসলিমদের দখলে আসে ইয়াহুদীরা ফসলের অর্ধাংশ প্রদান করার শর্তে এই সব জমি চাষাবাদের অধিকার প্রার্থনা করে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের এই প্রার্থনা মনজুর করেন
ইয়ারমুকের যুদ্ধ
যুদ্ধের ৫ম দিন ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতে মুসলিম ক্যাম্পের সীমানায় সাদা পতাকা হাতে বাইজান্টাইন দুত এসে দাড়াল বাইজান্টাইন সেনাপতি ভাহান কয়েকদিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাঠিয়েছে খালিদের কাছে তখনকার দিনে যুদ্ধেও এক ধরনের রাজসিক ভাব ছিল যুদ্ধ শুরুর আগে সম্রাট হেরাক্লিয়াস আর খলিফা উমর দুজনই যখন কুটনৈতিকভাবে একটা সমাধানে পৌছাতে চেস্টা করছিলেন, তখন এই ইয়ারমুখ প্রান্তরেই ভাহান আর খালিদ যার যার সেনাদল নিয়ে প্রায় একমাস মুখোমুখি তাবু গেড়ে বসে ছিলেন এরিমধ্যে একবার ভাহানের নিমন্ত্রনে খালিদ বাইজান্টাইন ক্যাম্পে গিয়ে শান্তি আলোচনাও করে এসেছিলেন, ফলাফল যথারীতি শুন্য, কেননা দুজনই জানতেন যুদ্ধ শুরু বা বাতিলের সিদ্ধান্তটা তাদের কারও হাতে নেই, যুদ্ধ একান্তই রাজনৈতিক ইস্যু

উমাইয়া খিলাফত
উমাইয়া খিলাফত (আরবি: الخلافة الأموية‎, trans. Al-Ḫilāfa al-ʾumawiyya) ইসলামের প্রধান চারটি খিলাফতের মধ্যে দ্বিতীয় খিলাফত এটি উমাইয়া রাজবংশকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠে ইসলামের তৃতীয় খলিফা উসমান ইবন আফ্ফানের খিলাফত লাভের মাধ্যমে উমাইয়া পরিবার প্রথম ক্ষমতায় আসে তবে উমাইয়া বংশের শাসন মুয়াবিয়া ইবনে আবু সুফিয়ান কর্তৃক সূচিত হয় তিনি দীর্ঘদিন সিরিয়ার গভর্নর ছিলেন ফলে সিরিয়া উমাইয়াদের ক্ষমতার ভিত্তি হয়ে উঠে এবং দামেস্ক তাদের রাজধানী হয় উমাইয়ারা মুসলিমদের বিজয় অভিযান অব্যাহত রাখে ককেসাস, ট্রান্সঅক্সানিয়া, সিন্ধু, মাগরেব ইবেরিয়ান উপদ্বীপ (আন্দালুস) জয় করে মুসলিম বিশ্বের আওতাধীন করা হয় সীমার সর্বোচ্চে পৌছালে উমাইয়া খিলাফত মোট .৭৯ মিলিয়ন বর্গ মাইল (,৫০,০০,০০০ বর্গ কিমি.) অঞ্চল অধিকার করে রাখে তখন পর্যন্ত বিশ্বের দেখা সাম্রাজ্যগুলোর মধ্যে এটি সর্ববৃহৎ ছিল অস্তিত্বের সময়কালের দিক থেকে এটি ছিল পঞ্চম[]
কিছু মুসলিমের কাছে উমাইয়াদের কর সংগ্রহ প্রশাসনিক ব্যবস্থা অনৈতিক ঠেকে অমুসলিম জনগণ স্বায়ত্তশাসন ভোগ করত এবং তাদের বিচারিক কার্যক্রম তাদের নিজস্ব আইন ধর্মীয় প্রধান বা নিজেদের নিযুক্ত ব্যক্তি দ্বারা চালিত হত[] তাদের কেন্দ্রীয় সরকারকে জিজিয়া কর দিতে হত[] মুহাম্মদ (সা) এর জীবদ্দশায় বলেন যে প্রত্যের ধর্মীয় সম্প্রদায় নিজেদের ধর্মপালন করবে নিজেদের শাসন করতে পারবে নীতি পরবর্তীতেও বহাল থাকে[] উমর কর্তৃক চালু হওয়া মুসলিম অমুসলিমদের জন্য কল্যাণ রাষ্ট্র ব্যবস্থা চলতে থাকে[][] মুয়াবিয়ার স্ত্রী মায়সুম (ইয়াজিদের মা) ছিলেন একজন খ্রিষ্টান রাষ্ট্রে মুসলিম খ্রিষ্টানদের মধ্যে সম্পর্ক ভাল ছিল উমাইয়ারা বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের সাথে ধারাবাহিক যুদ্ধে জড়িত ছিল[][][] গুরুত্বপূর্ণ পদে খ্রিষ্টানদের বসানো হয় যাদের মধ্যে কারো কারো পরিবার বাইজেন্টাইন সরকারে কাজ করেছিল খ্রিষ্টানদের নিয়োগ অধিকৃত অঞ্চলে বিশেষত সিরিয়ার বিশাল খ্রিষ্টান জনগোষ্ঠীর প্রতি ধর্মীয় সহিষ্ণুতার নীতি হিসেবে গ্রহণ করা হয় নীতি জনগণের সমর্থন আদায়ে সক্ষম হয় এবং সিরিয়াকে ক্ষমতার কেন্দ্র হিসেবে স্থিতিশীল করে তোলে[][]
আরব গোত্রগুলোর মধ্যকার বিরোধের কারণে সিরিয়ার বাইরের প্রদেশে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে বিশেষত দ্বিতীয় মুসলিম গৃহযুদ্ধ (৬৮০-৬৯২) বার্বার বিদ্রোহের (৭৪০-৭৪৩) সময় দ্বিতীয় গৃহযুদ্ধের সময় উমাইয়া গোত্রের নেতৃত্ব সুফয়ানি শাখা থেকে মারওয়ানি শাখার হস্তান্তর হয় ক্রমাগত যুদ্ধবিগ্রহের ফলে সম্পদ লোকবল কমে আসায় তৃতীয় মুসলিম গৃহযুদ্ধের সময় দুর্বল হয়ে পড়ে এবং চূড়ান্তভাবে আব্বাসীয় বিপ্লবের ফলে ক্ষমতাচ্যুত হয় পরিবারের একটি শাখা উত্তর আফ্রিকা হয়ে আল-আন্দালুস চলে যায় এবং সেখানে কর্ডোবা খিলাফত প্রতিষ্ঠা করে খিলাফত ১০৩১ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত টিকে ছিল এবং আন্দালুসের ফিতনার পর এর পতন হয়
আব্বাসীয় খিলাফত
আব্বাসীয় খিলাফত (আরবি: الخلافة العباسية‎ / ALA-LC: al-Khilāfah al-‘Abbāsīyyah) ইসলামী খিলাফতগুলোর মধ্যে তৃতীয় খিলাফত এটি আব্বাসীয় বংশ কর্তৃক শাসিত হয় বাগদাদ এই খিলাফতের রাজধানী ছিল উমাইয়া খিলাফতকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর আব্বাসীয় খিলাফত প্রতিষ্ঠিত হয় তবে আন্দালুসে উমাইয়া খিলাফত উৎখাত করা যায়নি
আব্বাসীয় খিলাফত নবী মুহাম্মদ (সাঃ) এর চাচা আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিবের বংশধরদের কর্তৃক ৭৫০ সালে কুফায় প্রতিষ্ঠিত হয় ৭৬২ সালে বাগদাদে রাজধানী স্থানান্তরিত করা হয় পারস্যে ১৫০ বছর ধরে নিয়ন্ত্রণ করার পর খলিফাকে প্রধান কর্তৃপক্ষ মেনে নিয়ে স্থানীয় আমিরদের কাছে ক্ষমতা ছেড়ে দিতে চাপ দেয়া হয় খিলাফতকে তার পশ্চিমাঞ্চলের প্রদেশ আন্দালুস, মাগরেব ইফ্রিকিয়া যথাক্রমে একজন উমাইয়া যুবরাজ, আগলাবি ফাতেমীয় খিলাফতের কাছে হারাতে হয়
মোঙ্গল নেতা হুলাগু খানের বাগদাদ দখলের পর ১২৫৮ সালে আব্বাসীয় খিলাফত বিলুপ্ত হয় মামলুক শাসিত মিশরে অবস্থান করে তারা ১৫১৯ সাল পর্যন্ত ধর্মীয় ব্যাপারে কর্তৃত্ব দাবি করতে থাকেন এরপর উসমানীয় সাম্রাজ্যের কাছে ক্ষমতা চলে যায় কনস্টান্টিনোপলে রাজধানী স্থাপিত হয়




কোরআন সংকলনের ইতিহাস:
ইসলামের ইতিহাস অনুযায়ী বলা যায়, কুরআন নুন্যতম চারবার সংকলন করা হয়
প্রথম প্রচেষ্টাঃ নবী' জীবদ্দশায়ঃ
নবী মোহাম্মদের সময়ে সম্পূর্ন কোরানের সংকলণের উদ্যোগ নেয়ার কন প্রমান পাওয়া না গেলেও বিক্ষিপ্ত ভাবে বিভিন্নজনের কাছে ছাল, পার্চমেন্ট, খেজুর পাতা, হাড় ইত্যাদিতে আয়াত লেখা হত কথিত আছে, এর সংরক্ষক ছিলেন প্রায় ৪২ জন সাহাবি, যাদের কাতেবে ওহী বলা হত এদের মধ্যে কিছু সাহাবীর কাছে সম্পূর্ণ কোরান ছিলযাঁদের মধ্যে ইবনে মাসঊদ -এর নাম উল্লেখযোগ্য তা ছাড়া হযরত আলীও দাবি করেছিলেন যে উনার কাছেও এক সম্পূর্ণ কোরান ছিল যা কালক্রমিক ভাবে সংকলিত ছিল
নবী নিজে বলতেন যে, তোমরা চার ব্যক্তি থেকে কুরআন শিক্ষা কর- আবদুল্লাহ্ ইবন মাসঊদ , সালিম , মুআয এবং উবায় ইবন কা (সহিহ বুখারী, খন্ড , অধ্যায় ৬১, হাদিস ৫২১)
খুব অবাক করা বিষয় হল এই শিক্ষকদের মধ্যে পরবর্তী খলীফাদের নাম বা পরবর্তী সংকলকদের নাম, এমনকি যেমন নবীর জামাতা উসমানের নাম অন্তর্ভুক্ত নয়
দ্বিতীয় প্রচেষ্টাঃ খলিফা আলী' সংকলনঃ
নবীর মৃত্যুর পর পরই, ছয় মাসের মাথায়, তার চাচাত ভাই পরবর্তীতে খলিফা আলী দাবি করেছিলেন যে তার কাছে একটি সম্পূর্ণ কোরান কালক্রমিক ভাবে (যে আয়াত যখন নাজেল হয়েছে বলে কথিত সেভাবে) সংকলিত আছে, কিন্তু খিলাফতের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারনে, রহস্যজনক ভাবে সেটিকে প্রকাশ করতে দেয়া হয়নি যদিও ইরাক অঞ্চলের মুসলমানেরা আজও আলীর সংকলনটিই সঠিক ছিল বলে বিশ্বাস করে
তৃতীয় প্রচেষ্টাঃ খলিফা আবুবকর এর সময়কালেঃ
আবু বকরের সময় ইয়ামামার যুদ্ধে প্রায় ৭০ জন হাফেজে কুরআন শহীদ হন ফলে কোরানে হাফেজরা মারা যেতে থাকলে কোরানের একটা বিরাট অংশই হারিয়ে যেতে পারে সেই ভয় থেকে ওমরের পরামর্শে আবু বকর বহু বিবেচনার পর যায়েদ বিন সাবিতকে কুরআন সংকলনের জন্য নিযুক্ত করেন মুসলমান ঐতিহাসিকেরা এই সঙ্কলনকেমাসহাফে সিদ্দিকীবলে অভিহিত করেন যা মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তা আবু বকর নিজের কাছেই রেখেছিলেন, পরবর্তীতে ওমর তা নিজের কাছে রেখেছিলেন এবং এবং অবশেষে তা ওমরের কন্যা নবীপত্নী হাফসা সংরক্ষণ করেন মুসলমান ঐতিহাসিকদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, এই মাসহাফে সিদ্দিকীই পরবর্তী সময়ে পবিত্র কোরআন গ্রন্থাকারে সংকলনে মূল ভিত্তি হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে, কিন্তু সে দাবী প্রামান্য নয়
চতুর্থ প্রচেষ্টাঃ উসমান এর সময়কালে:
সহী বুখারী, বই-৬১, হাদিস-৫১৩ থেকে আমরা পাইঃ
আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস বর্ণিত- আল্লাহর নবী বলেছিলেন, জিব্রাইল আমার কাছে কোরাণকে এক রীতিতে উচ্চারণ করত অত:পর আমি তাকে বলতাম তা অন্য রীতিতে উচ্চারণ করতে এবং সে বিভিন্ন রীতিতে তা উচ্চারণ করত এবং এভাবে সে সাতটি রীতিতে উচ্চারণ করে আমাকে শিখাত
কাজেই, দেখা যাচ্ছে সাতটি ভিন্ন উচ্চারনে কুরান নাজিল হয়েছিল সেক্ষেত্রে কুরানকে যদি গ্রন্থাকারে সংকলিত করতেই হয় তাহলে সেই সাতটি উচ্চারনেই কুরআন সংকলন করা হলে সেটি হতো বিশুদ্ধতম সংকলন ভিন্ন ভিন্ন শব্দের জন্য একটি আঞ্চলিক ভাষার শব্দকোষ প্রনয়ন করেই সে সমস্যার সমাধান করা যেত, কিন্তু উসমান এবং তাঁর পরামর্শদাতারা অত্যন্ত স্বৈরাচার সুলভ মানসিকতায় এই দাবী করেন যে, মূল কুরআন আরবের কুরাইশদের ভাষায় নাযিল করা হয়েছিল, এবং আরবের বিভিন্ন অঞ্চলে আঞ্চলিক ভাষায় কুরআন পাঠ অব্যাহত থাকলে তার মুল অর্থ বিকৃত হতে পারে কার্যত দেখা যায় যে যায়েদের সঙ্কলন, অন্যান্য সাহাবাদের সঙ্কলন এবং বিভিন্ন সাহাবাদের মুখস্থ করা সুরা আয়াতের অসামঞ্জস্য পরিলক্ষিত হচ্ছে
উসমান যায়েদের প্রথম সংকলনটিকে মূল কপি হিসেবে ধরে নিয়ে নিজের একটি সংকলন তৈরি করেন, এবং তার বিভিন্ন কপি খেলাফতের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠিয়ে দেন একই সঙ্গে উসমান বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আঞ্চলিক ভাষায় লিখিত কুরআনের বিভিন্ন সংস্করণগুলো সংগ্রহ করে জ্বালিয়ে দেয়ার নির্দেশ দেন কিন্তু উসমানের এই প্রমিত কোরআন কোরান সর্বজন স্বীকৃত হয়নি কারন এই কোরান সংকলিত হয়েছে খুবই এলোমেলো স্বেচ্ছাচারি ভাবে ধারনা করা হয় উসমান এই কোরআন নিজের সুবিধামত সংকলিত করেছিলেন যে কারনে পরবর্তীতে ধর্মান্ধ জিহাদিরা তাকে নিতান্ত নির্দয়ভাবে খুন করে
রাজমের আয়াত, রাগবাতের আয়াত, জিহাদের আয়াত, আয়াতে ফারাশ ইত্যাদি আয়াতগুলি নিয়ে মুসলমানদের মধ্যে রয়েছে প্রবল বিভ্রান্তি;নবীর মৃত্যুর পরপরই ছাগল আয়াত খেয়ে নেয়ার কারনেও আয়াত বাদ পড়ে যায় প্রসঙ্গে সহিহ হাদিসও আছে
আয়শা বর্ণিত-পাথর মারা প্রাপ্ত বয়স্কদেরকে স্তন্য পান করানোর বিষয়ে যে আয়াত নাযিল হয়েছিল, তা একটা পাতায় লিখে আমার বিছানার নিচে রাখা হয়েছিলযখন নবী মারা গেলেন আর আমরা তার দাফন নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম, তখন একটা ছাগল ঘরে ঢুকে আয়াত লেখা পাতা খেয়ে ফেলে [ইবনে মাজা, হাদিস-১৯৩৪]
খলিফা হওয়ার পর, আলী ওসমানের সংকলনে অসংগতির কথাগুলো জোড়ালোভাবে তুলে ধরেন, একটি নতুন সংকলনের চেষ্টাও করেন, কিন্তু বিভিন্ন সাহাবা, নবীপত্নী আয়েশা অন্যান্যদের প্রবল বিরোধিতার কারনে শেষাবধি উসমানের সংকলনটিই টিকে থাকে
উসমানের এই সংকলনটিও সংরক্ষিত হয়নি তিনটি প্রাচীন সংস্করণ আমত্রা দেখিঃ
কুফি হরফে লেখা, উজবেকিস্তানের তাসখন্দে সংরক্ষিত কোরআনটিতে উসমানের রক্তের ছাপ আছে বলে কথিত হলেও সেটি প্রামান্য নয় তাছাড়া এই কোরআনটিতে বানান ভুল পরিলক্ষিত হয় এবং এর অনেক আয়াত হারিয়ে গেছে
তুরস্কের ইস্তাম্বুলের টপকাপিতে সংরক্ষিত কোরআনটিরও কোন প্রামান্যতা নেই, কারন এর বয়স নির্ধারণের জন্য প্রয়োজনীয় বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা আজও করতে দেয়া হয়নি কাজেই এগুলোর কোনটাই যে উসমানের সমসাময়িক কালের, তা নির্দিষ্টভাবে ভাবে প্রমাণ করা যায় না
১৯৭৬ সালে ইয়েমেনের সানা' মসজিদে পাওয়া কোরআনটি সবচাইতে প্রাচীন বলে কথিত এবং এর সাথে বর্তমানে প্রচলিত কোরআনের বেশ কিছু অসঙ্গতি পাওয়া গেছে বলেই বোদ্ধা মহলে কথিত কিন্তু এই কোরআনটি নিয়েও কোন গবেষণা বা বিতর্কের পথটি মুসলমান সমাজ কর্তৃক নিষিদ্ধ
পরবর্তীকালে সংরক্ষণঃ
উমাইয়া খেলাফতে কালে অনারবদের নিকট কুরআনকে সহজ সাধ্য করে তুলতে আবুল আসওয়াদ আদ দোয়াইলী ফারাহ প্রমুখ ব্যাকরণবিদদের সহায়তায় হাজ্জাজ বিন ইউসুফ আল কুরআনে নুকতা এবং হরকত সংযোজন করেন
আরবদেশের পরিচয়:
আরবশব্দের সঠিক অর্থ কী তা নিশ্চিত করে বলা যায়না সেমিটিক শব্দ আরবাহ মানে জংলী, এরেব মানে মিশ্রিত লোকজন, আরবি মানে অসভ্য মানুষ যার কোন সভ্য কোন জ্ঞান নাই, অনেকে আবার, বিশুষ্ক প্রান্তর বা অনুর্বর জমিন বুঝাতে আরব শব্দ ব্যবহার করেন তবে BCE থেকে আরব উপদ্বীপ এর অধিবাসীদের জন্যআরবশব্দটি ব্যবহৃত হয়ে আসার প্রমাণ পাওয়া যায়
জজিরাতুল আরবের পশ্চিমে- লোহিত সাগর এবং সায়না উপদ্বীপ পূর্বে- আরব সাগর দক্ষিণে- ইরাকের বিরাট অংশ এবং আরও দক্ষিণে আরব সাগর যা ভারত মহাসাগরের বিস্তৃত অংশ উত্তরে- সিরিয়া উত্তর ইরাকের একাংশ সর্বমোট এলাকা- দশ থেকে তের লাখ বর্গমাইল
জজিরাতুল আরব বহু প্রান্তর মরুভূমির প্রতিরক্ষায় ঘেরা থাকার কারণে এর অধিবাসীরা প্রাচীনকাল থেকেই স্বাধীন স্বয়ংসম্পূর্ণ আর বাধার প্রেক্ষিতে প্রতিবেশী বৃহৎ সাম্রাজ্যগুলো কখনোই তাদের উপর প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হয়নি
অবস্থান- আরব উপদ্বীপ তৎকালীন সকল মহাদেশের মাঝখানে ছিল উত্তর-পশ্চিমে- আফ্রিকা মহাদেশের প্রবেশদ্বার উত্তর-পূর্বে- ইউরোপ পূর্বে- ইরান, মধ্য এশিয়া দূর প্রাচ্যের প্রবেশ পথ, যে পথে ভারত চীন পর্যন্ত যাওয়া যায়

Comments

  1. ভাই খুব চমতকার হয়েছে, তবে মহব্বত ওেআদবরে গুরুত্ত আরো বারাতে হব।

    ReplyDelete
  2. চরবারের বক্ষ বিদারনের কথা কোথায় পেলেন ভাই

    ReplyDelete
  3. কত খ্রিষ্টাব্দে প্রথম বক্ষ বিদীর্ণ হয়?

    ReplyDelete

Post a Comment

Popular posts from this blog

বিষয় ভিত্তিক আয়াত-হাদিসঃ মুমিনের লক্ষ্য উদ্দেশ্য - দাওয়াত - সংগঠন - প্রশিক্ষণ - ইসলামী শিক্ষা - ইসলামী বিপ্লব

বিষয় ভিত্তিক আয়াত-হাদিসঃ মুমিনের লক্ষ্য উদ্দেশ্য - দাওয়াত - সংগঠন - প্রশিক্ষণ - ইসলামী শিক্ষা - ইসলামী বিপ্লব মুমিনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য কুরআন انى وجهت وجهى للذي فطر السموات والارض حنيفا وما انا من المشركين ـ (انعام ـ 79) উচ্চারণ: : ইন্নী ওয়াজজাহাতু ওয়াজহিইয়া লিল্লাযী ফাতরাস সামাওয়াতি ওয়াল আরদা হানীফাও ওয়া মা আনা মিনাল মুশরিকীন। (১) আমি তো একমুখী হয়ে নিজের লক্ষ্য সেই মহান সত্তার দিকে কেন্দ্রীভূত করছি যিনি যমীন ও আসমানসমূহকে সৃষ্টি করেছেন এবং আমি কনিকালেও মুশরিকদের মধ্যে শামিল নই। (সূরা আনয়াম: ৭৯) قل ان صلاتى ونسكى ومحياي ومماتى لله رب العلمين ـ (انعام :162) উচ্চারণ: : কুল ইন্না ছালাতী ওয়া নুসুকী ওয়া মাহইয়াইয়া ওযা মামাতী লিল্লাহি রাব্বিল আ’লামীন। (২) বল, আমার নামায, আমার যাবতীয় ইবাদত, আমরা জীবন ও মৃত্যু সবকিছুই সারা জাহানের রব আল্লাহরই জন্য। (সূরা আনয়াম: ১৬২) وما خلقت الجن والانس الا ليعبدون ـ (ذارية ـ 56) উচ্চারণ: : ওয়া মা খলাকতুল জিন্না ওয়াল ইনসা ইল্লা লিইয়া’বুদূন। (৩) আমি জ্বিন ও মানুষকে অন্য কোন উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করিনি, কেবল এজন্য সৃষ্টি করেছি যে তারা আমার বন্

আল-আইয়্যামে ড. ত্বহা হুসায়নের শৈশব জীবন চিত্র

আল-আইয়্যামে ড. ত্বহা হুসায়নের শৈশব জীবন   চিত্র আরবী সাহিত্য জগতে উনিশ শতকের শেষার্ধে মিশরে ডঃ ত্বহা হুসায়নের আবির্ভাব ঘটে ; সে সময় অনুকরণের উষ্ণ হাওয়া বইছিল। নানা প্রকার কুসংস্কারে নিপতিত , বৈদেশিক শাসনের যাতাকলে নিষ্পেষিত , ব্যক্তি স্বাতন্ত্র্য ও বাক স্বাধীনতা , রাজনৈতিক অধিকার , অর্থনৈতিক মূল্যবোধ , মানবিক অধিকার ও সামাজিক মর্যাদা থেকে জাতি বঞ্চিত অবহেলিত , ঠিক তখন এ লাঞ্ছিত , উৎপীড়িত দিশেহারা জাতিকে পথ নির্দেশনার জন্যই ছিল তাঁর সাহিত্যকর্ম । তাঁর ক্ষুরধার লিখনীতে তন্দ্রাচ্ছন্ন জাতির সুপ্তপ্রাণে বিপ্লবের জোয়ার এসেছিল। তিনি ছিলেন একাধারে শিক্ষাবিদ , সংস্কারক , গবেষক , ঐতিহাসিক , বিজ্ঞানধর্মী সমালোচক , প্রভাবশালী বাগ্নী , সর্বোপরি আধুনিক মিশর ও আধুনিক আরবী সাহিত্যের অন্যতম পুরোধা।১ The New Encyclopaedia Britannica তে বলা হয়েছে “Taha Hussain, was an outstanding Figure of the Modernist movement in Egyptian literature.” 2  ডঃ ত্বহা হুসায়ন রচিত অসংখ্য গ্রন্থাবলীর মধ্যে আল- আইয়্যাম বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য। এটি তিন খন্ডে সমাপ্ত। যার মধ্যে তিনি নিজ জীবনীর বিভিন্ন দিক তু

মনে রাখার সহজ কৌশলে Exclusive টেকনিকে আর্ন্তজাতিক বিষয়াবলী সাধারন জ্ঞান। আশা করি মনোযোগ দিয়ে একবার পড়লেই মনে থাকবে।

মনে রাখার সহজ কৌশলে Exclusive টেকনিকে আর্ন্তজাতিক বিষয়াবলী সাধারন জ্ঞান। আশা করি মনোযোগ দিয়ে একবার পড়লেই মনে থাকবে। SAARC এর সদস্যঃ Exclusive টেকনিকঃ NIPA MBBS পড়তে আগ্রহী। NIPA = নেপাল, ইন্ডিয়া, পাকিস্তান, আফগানিস্থান। MBBS= মালদীপ, বাংলাদেশ, ভুটান, শ্রীলংকা। ECO – ভুক্ত শর্টকাট মনে রাখার নিয়মঃ Exclusive টেকনিকঃ আইতু + ৭ স্তান। =আজারবাইজান, ইরান, তুরস্ক, আফগানিস্তান, পাকিস্তান, কাজাখস্তান, কিনঘিজিস্তান, তুর্কিমেনিস্তান, তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান। D-8 ভুক্ত শর্টকাট মনে রাখার নিয়মঃ Exclusive টেকনিকঃ বাপ মা নাই তুমিই সব। বাংলাদেশ, পাকিস্তান, মালয়শিয়া, নাইজেরিয়া, ইন্দোনেশিয়া, তুরস্ক, মিসর, ইরান। ASEAN এর সদস্যঃ Exclusive টেকনিকঃ MTV তে FILM দেখলে BCS হবে না। Mayanmar, Thailand, Vietnam, Phillipines, Indonesia, Laos, Malaysia, Brunei, Cambodia, Singapore. Super Seven এর সদস্যঃ Exclusive টেকনিকঃ থামাই+ সিতাদহ থাইল্যান্ড, মালয়শিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সিংগাপুর, তাইওয়ান, দঃ কোরিয়া, হংকং। থাইল্যান্ড, মালয়শিয়া, ইন্দোনেশিয়া + FOUR TIGERS. Scandinavian States এর সদস্যঃ Exclusive টেকন